- সংসার জীবন
- পারিপার্শ্বিক পরিবেশ।
পারস্পরিক বিশ্বস্ততা :- সুখী  সংসার গঠনের পূর্বতম শর্ত হলো বিশ্বস্ততা। বিশ্বাসহীন সংসার টিকে থাকা  দুরূহ। বছরের পর বছর একই ছাদের নিচে বসবাস করার পরও দেখাযায় দুজনার মধ্যে  প্রচুর বিশ্বস্ততার অভাব রয়েছে।কিন্তু তারা সংসার করছে কেবল সমমানহানি হবে  বলে এবং বিশৃঙ্খলার ভয়ে অথবা ছেলেমেয়ের ভবিষ্যতের কথাচিন্তা করে। সুখী  দাম্পত্য জীবন চাইলে দুজনার মধ্যে বিশ্বস্ততা বাড়াতে হবে, অবিশ্বাসের মূল  উঠিয়ে ফেলতে হবে, তথাপি অবিশ্বাসের বিষয়টি দুজনইআলোচনার মাধ্যমে নিরসন করতে  হবে।
স্বামী-স্ত্রীর বয়স :- স্বামী-স্ত্রীর  মধ্যে বয়সের তারতম্য দেখা যায়, কারো ক্ষেত্রে তা কম আবারকারো কারো ক্ষেত্রে  তা বেশি। আমাদের দেশে সাধারণ স্বামীর বয়স স্ত্রীর বয়সের তুলনায় অনেক বেশি  থাকে আর তাই স্ত্রীর আচরণে কিছু ছেলেমানুষি দেখা যায়, তা স্বামীকে বুঝতে  হবে এবং তার পজিটিভছেলেমানুষিগুলো মেনে নিতে হবে এবং নেগেটিভগুলোকে বুঝিয়ে  সংশোধন করতে হবে। অন্যদিকে স্বামীর বয়স যেহেতু একটু বেশি তাই সে একটু  সিরিয়াস থাকে, এটা স্ত্রীকে বুঝতে হবে এবং ছেলেমানুষি যথাসম্ভব কম করতে  হবে। সর্বোপরি দুজনের ভালো বিনিময়ই সুখী সংসার।
স্বাধীনতা :- স্বাধীনতা  হলো মানুষের মৌলিক অধিকার। এই অধিকার খর্ব হলে মানুষের প্রতি মানুষের  বিতৃষ্ণা দেখা যায় এবং আচরণে অসঙ্গতি দেখা যায়, অবসান পায় শ্রদ্ধাবোধ এবং  মানুষ ব্যাকুল হয় স্বাধীনতা লাভের জন্য। প্রয়োজনে সে হেয় কাজ করতে  দ্বিধাবোধ করে না। আমাদের দেশে মানুষের মধ্যে কিছু ভ্রান্ত ধারণা দেখা যায়  আর তা হলো স্বাধীনতা পেলেমানুষ নাকি খারাপ পথে পরিচালিত হয়। কিন্তু এ ধারণা  মিথ্যা। স্বাধীনতাপেলে মানুষের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাবোধ বাড়ে।
মূল্যায়ন :- সংসার  জীবনে নিজের তুলনায় অন্যকে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে অর্থাৎ নিজেকে এখানে  যথা সম্ভব কম তুলে ধরতে হবে হোক সে স্ত্রী বা স্বামী।সংসার জীবনে দেখা যায়  প্রভাবশালী ব্যক্তিরাই মূল্যায়নের আশাবাদী। আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে  দেখেছি আমার এক নিকটআত্মীয়ের স্ত্রীর সাথে দ্বন্দ্ব লেগেই থাকত এবং সামনে  থাকতে স্ত্রী শ্রদ্ধা করত ও পেছনে সমালোচনা করত এবং নিন্দায় ভরে যেত তার  মন। ব্যাপারটি আমি খতিয়ে দেখি স্বামী স্ত্রীর কাছে থেকে বেশি সমমানের আশা  করত, সমাজে তার অবস্থান তুলে ধরত এবং বেশি বেশি বলত আমি এই-সেই-কত কী?  আমাদের এই ধরনের মনমানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে  “একজন রাজা তার স্ত্রীর কাছে একজন সাধারণ স্বামী।”
দূরত্ব :- সংসার  জীবনে দুজনের মধ্যে থাকবে ছোট একটু ফাঁক, এর মানে বিচ্ছন্নতানয়। শুধু একটু  শ্বাস ফেলার স্থান। এর মানে সে যা করতে চাচ্ছে না তা থেকে তাকে অব্যাহতি  দেয়া। থাকুক না বাবা একটু দূরত্ব। সংসার জীবনে একটু ছাড় দিতেই হয়।  সংসারজীবন তো আর মিলিটারি রোল নয়। সংসার হলো ভালোবাসা, সম্প্রীতি ও  শ্রদ্ধাবোধ। কিছু কিছু সত্য বলা থেকে বিরত থাকা।  অনেককে বাংলা ছবির সংলাপ  বলতে দেখা যায় ‘এই সত্য কথা তাকে না বললে নিজেকে ক্ষমা করতে পারব না’  কিন্তু এই সত্য স্বামী স্ত্রীকে বা স্ত্রী স্বামীকে বলে তখন ক্ষণিক সময়ে তা  মেনে নেয় কিন্তু পরবর্তী সময়ে এটা সত্যবাদীর জন্য দুর্বলতার কারণ হয়ে  দাঁড়ায়। এ জন্য এমন কোনো সত্য কথা কথা বলা যাবে নাযা ভবিষ্যতে অস্ত্র  হিসেবে কাজ করবে।
পারস্পরিক সম্প্রীতি :- প্রখ্যাত  মনোবিজ্ঞানী সিগমন্ড ফ্রয়েড মনে করেন পিতা-মাতার কলহ শিশুর যৌন ও সংসার  জীবনের প্রতিঅনীহা দেখা যায় এবং বিকাশে বাধা প্রদান করে। তাই দুজনকে শিশুর  স্বার্থেই সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে।
ক্ষমার মন-মানসিকতা ও শ্রদ্ধাবোধ :- কঠোর  হলে হবে না দুজনের মধ্যে প্রচুর ক্ষমার মানসিকতা যেমন থাকবে, তেমনি  পারসপরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে। এই শ্রদ্ধাবোধ সংসারের বন্ধন দৃঢ় করে।  তেমনি মানসিকতা থাকবে প্রচুর প্রফুল্ল এবং দুজন দুজনের প্রতি সমান দায়িত্ব  পালন করবে।উপরোক্ত বিষয়গুলোর মূল কথা হলো কম্প্রোমাইজ। দুজনের  বোঝাপড়ার মাধ্যমেই সুখী সংসার গঠন করা সম্ভব হয়। অন্যথায় দুজনকেই তুষের  আগুনে চিরকাল জ্বলতে হয়।
Sign up here with your email
 

 

 
ConversionConversion EmoticonEmoticon